যারা ফেসবুকে বেশি সময় পার করেন তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অন্যের পোস্টে বেশি লাইক-কমেন্ট করেন তারা অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করেন বেশিরভাগ সময়। আরেকজনের হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখে নিজের জীবনকে অর্থহীন ও একঘেয়ে মনে হয় তাদের কাছে।

পাঁচ বছর আগের এক জরিপে দেখা যায়, সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন প্রায় এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যটিতে। সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করা অত্যন্ত ভালো ও উপকারী একটি বিষয় এতে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন্তু এসবই মুখোমুখি সাক্ষাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, ভার্চুয়ালি নয়। অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অন্যের জীবনের সাথে নিজেকে তুলনা করায় তাদের আচার-আচরণের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। মানুষ যেহেতু তাদের জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখাতে বেশি আগ্রহী থাকে।

তাই তাদের মনে বিশ্বাস জন্মায়, অন্যদের তুলনায় তার জীবন অনেক বেশি কষ্টের। গবেষকরা ধারণা করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ফলে অনেক নেতিবাচক জিনিস আমাদের ব্যক্তিজীবনে পড়ে।

সম্প্রতি দুই গবেষক হলি বি. শাকিয়া ও নিকোলাস এ. ক্রিস্টাকিস ৫ হাজার ২০৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ফেসবুক ব্যবহারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আশ্চর্য্যজনক ফলাফল দেখতে পান। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের কাছে এমন চারজন বন্ধুর নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল যাদের সঙ্গে তারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

এর বাইরে আরও চারজন বন্ধুর নাম নেয়া হয়েছিল যাদের সঙ্গে তারা অবসরে সময় কাটান। দুই বছর ধরে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পর দেখা যায়, বাস্তবজীবনের সামাজিক যোগাযোগ সামগ্রিক ভালো থাকার ওপর ভালো প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে ফেসবুকের যোগাযোগ সামগ্রিক ভালো থাকার ওপর বাজে প্রভাব ফেলে।

শাকিয়া ও নিকোলাস দেখতে পান, যারা অন্যের কনটেন্টে বেশি লাইক দেন ও বিভিন্ন লিঙ্কে ক্লিক করেন তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং জীবনের সন্তুষ্টি কম থাকে। এছাড়া দেখা যায়, ফেসবুকে বেশি সময় দেওয়ার কিছুদিন পর থেকে ভালো থাকার পরিমাণও কমছে। তারা দেখেছেন,

অন্যের পোস্টে বেশি লাইক দেওয়া মানুষ ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে নিজের তুলনা করেন। আরেকজনের সুন্দর, হাস্যোজ্জ্বল প্রোফাইল পিকচার দেখে নিজের জীবনকে বিবর্ণ ও একঘেয়ে মনে হয় অনেকের কাছে।

 

 

 

কলমকথা/ বিথী